বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনলাইন জিডি কার্যক্রম : ডিজিটাল ব্যর্থতা : পর্ব-২
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার
স্বপ্ন দেখিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছিল আইসিটি
খাতের সম্ভাবনাকে সার্থক করে তোলার কথা। বাংলাদেশের মানুষকে ডিজিটালাইজড
করার অজস্র স্বপ্ন দেখালেও এখন পর্যন্ত ‘ডিজিটাল’ শব্দের কোথাও বাস্তবায়ন
দেখা যায় না। বরং বর্তমান সরকারের আমলে যা কিছু ডিজিটাল বলে উদ্বোধন করা
হয়েছিল তার পূর্ণাঙ্গ রূপ পাওয়ার আগেই ক্রমে বন্ধ হতে চলেছে। আর তাই
ডিজিটাল সরকারের ডিজিটাল ব্যর্থতা নিয়ে আমাদের এই ধারাবাহিক আয়োজন—
অনেকটা ঢাকঢোল পিটিয়ে বাংলাদেশে অনলাইনে ডিজিটাল জিডি করার একটি কার্যক্রম শুরু হয়েছিল আজ থেকে দুই বছর আগে। কিন্তু ডিজিটাল পদ্ধতির নামে এনালগ কার্যক্রম পরিচালনা করায় বন্ধ হতে চলেছে অনলাইনে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ব্যবস্থা। প্রচারণার অভাবে অনলাইনে জিডি আবেদনকারীদের অনাগ্রহ আর পুলিশের অনীহার কারণে থেমে গেছে পুলিশের এ সেবা কার্যক্রম। এমন পরিস্থিতিতে এ কার্যক্রম পুরোপুরিই বন্ধ করে দেয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, অনলাইন জিডি কার্যক্রম থমকে গেলেও ভোগান্তি কমাতে ডিএমপি সদর দফতরে জিডি গ্রহণে বিশেষ সেল চালু করার চিন্তা-ভাবনা চলছে। তবে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা বলছেন, অনলাইন জিডি নিয়ে অনলাইনে সাপোর্ট দিতে পারলে এবং আইনি জটিলতা না থাকলে অনলাইন জিডির বিষয়টি জনপ্রিয়তা পেত।
অনলাইন জিডি শুরুর কথা
অনলাইন জিডি কার্যক্রম প্রথম শুরু হয়েছিল ২০১০ সালের ৩ মার্চ উত্তরা মডেল থানায়। তত্কালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন অনলাইনে জিডি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। পরে ডিএমপির ৪১টি থানায় এ কার্যক্রম ছড়িয়ে দেয়া হয়। পর্যায়ক্রমে প্রত্যেক থানায় কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের সংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। সেসময় অনলাইন জিডির আওতায় যেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল তা হচ্ছে—ইভটিজিং, ছিনতাই, দলিল-দস্তাবেজ ইত্যাদি হারিয়ে যাওয়া, নতুন-পুরনো নৈশপ্রহরী, দারোয়ান, গৃহপরিচারিকা, কেয়ারটেকার নিয়োগ বা পলায়ন; ভাড়াটিয়া সম্পর্কিত তথ্য, প্রবাসী সমস্যা, অভিযোগ ভিকটিম ইনফরমেশন প্রভৃতি।
অনলাইনে জিডির সংক্ষিপ্ত নিয়ম
অনলাইনে জিডি করতে হলে ডিএমপি বা বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইটে (www.police.gov.bd A_ev www.dmp.bd.gov) লগ ইন করতে হবে। এসব ওয়েবসাইটে ‘সিটিজেন হেল্প রিকোয়েস্ট অপশন’-এ ক্লিক করলে জিডি করার পেজটি আসবে। সেখানে পর্যায়ক্রমে কয়েকটি ফরম রয়েছে। সমস্যা অনুযায়ী এসব ফরম পূরণ করতে হবে। পাশাপাশি অভিযোগকারীকে সমস্যার কথাও উল্লেখ করতে হবে। মামলার জন্য বা কারও হুমকির সম্মুখীন হলে এ সংক্রান্ত বিবাদীর ফোন নম্বর ও মোবাইল নম্বর উল্লেখ করতে হবে। পরীক্ষার কাগজপত্র, পরিচয়পত্র, মোবাইল ফোন, ব্যাংকের জরুরি কাগজ ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রের নাম উল্লেখ করতে হয় গ্যালারি ফরমে। থানায় জিডি করতে হলে জিডির কপিতে যে ব্যক্তি জিডি করবে তাকে নিজ হাতে স্বাক্ষর দিতে হয়। আর অনলাইনে জিডির ক্ষেত্রে নিজের কোনো স্বাক্ষর দিতে হয় না। ঘরে বা কর্মক্ষেত্রে বসেই করা যায় জিডি। আবেদন করতে হলে বাংলা বা ইংরেজিতে লেখা যাবে। বাইরে লিখে ওয়ার্ড ফাইল ও পিডিএফ ফাইল সংযুক্ত করে দেয়ার ব্যবস্থা আছে। আবেদন করার পর আবেদনকারীকে অনলাইনে একটি সিরিয়াল নম্বর ও একটি সম্ভাব্য তারিখ দেখানো হয়। ওই তারিখের মধ্যে স্থানীয় থানায় গিয়ে নম্বর দেখিয়ে একটি কপিতে স্বাক্ষর করে জিডির কপিটি তুলতে পারেন আবেদনকারী। আবার পুলিশের তাত্ক্ষণিক সাড়া দেয়ার প্রয়োজন নেই এমন ক্ষেত্রে যেমন পাসপোর্ট হারানো, বখাটে বা মাদকসেবীদের সম্পর্কে তথ্য প্রদান বা এজাতীয় ক্ষেত্রে অনলাইনে জিডি করা যেতে পারে বা সরাসরি পুলিশ সদর দফতরে ফ্যাক্স বা ই-মেইল করতে পারেন। এ পদ্ধতিতে দেশের বাইরে থেকেও জিডি করা সম্ভব। এক্ষেত্রে অনলাইনে জিডি করার পর ই-মেইল বা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জিডি নম্বরটি জিডিকারীকে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ই-মেইল : bangladesh@police.gov.bd ফ্যাক্স : +৮৮০-২-৯৫৫৮৮১৮
তবুও যেতে হয় থানায়!
অনলাইনে আবেদন করলেও জিডির কপি সংগ্রহ করতে থানায় যেতে হবে আবেদনকারীকে। ডিজিটাল বলা হলেও শতভাগ এনালগ পদ্ধতি। অনলাইনেই জিডির কপি তোলার ব্যবস্থা নেই। অসম্পূর্ণ তথ্য দিয়েই করা হচ্ছে বেশিরভাগ জিডি। এসব জিডির তদন্তও হচ্ছে না। আবেদনের পর সাড়া মিলছে গড়ে এক সপ্তাহ পর। দিন দিন জিডির সংখ্যা কমছে। অথচ প্রতিদিন রাজধানীতে সহস্রাধিক লিখিত জিডি হচ্ছে। ভুক্তভোগী ও পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, পদ্ধতিগত জটিলতা ও প্রচারের অভাবে আবেদনকারীরা অনলাইনে জিডি করছেন না। প্রত্যেক থানার নিজস্ব পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে নিজেদের জিডিগুলো দেখতে পারলেও তারা তা এডিট করতে পারে না। পুরো প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণ হয় ডিএমপির দফতর থেকে। দায়িত্বশীল কর্মকর্তা শারমিন আফরোজ বলেন, ‘অনলাইনের মাধ্যমেই আবেদনকারীকে জিডির কপি দেয়ার প্রযুক্তি আমাদের নেই। বিষয়টি নিয়ে ভাবা হচ্ছে। জিডির আবেদন করার সঙ্গে সঙ্গে আবেদনকারীকে অনলাইনের রেফারেন্স নম্বর দিয়ে দেয়া হয়। অনেকে ওই রেফারেন্স নম্বরসহ আবেদন কপি দিয়ে তার প্রয়োজন মেটায়। অনলাইনে আবেদন করার পর সিরিয়াল নম্বর ও সম্ভাব্য তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানা থেকে জিডির কপি সংগ্রহ করতে হচ্ছে আবেদনকারীকে।’
অনলাইনে প্রথম জিডিই ভুয়া!
অনলাইনে জিডির ব্যবস্থা ডিজিটাল হলেও কেউ এখানে ক্রাইম করলে তা ডিজিটাল পদ্ধতিতে ধরার কোনো প্রযুক্তি নেই বাংলাদেশে। আর তাই ২০১০ সালে অনলাইনে জিডি ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর প্রথম ওই বছরের ৫ মার্চ উত্তরা থানায় অনলাইনে যে জিডি করা হয়, তা ছিল ভুয়া। এনামুল হক নামে এক ব্যক্তি অসম্পূর্ণ ঠিকানা দিয়ে আবেদনে জানান, তার পরিচয়পত্র হারিয়ে গেছে। অনলাইনের ৩৩ নম্বর রেফারেন্সের ৩৮৩ নম্বর ওই জিডিতে একটি মোবাইল ফোনের নম্বর দেয়া হয়। ওই মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে অপর প্রান্ত থেকে জানানো হয়, ফোনটির মালিকের নাম হাবিবুর রহমান। তিনি কুমিল্লায় থাকেন এবং তিনি ঢাকায় কখনও কোনো জিডি করেননি!
অনলাইনে জিডি ফরমেটে চলছে সাইবার ক্রাইম
জিডির আবেদনের নামে শুরু হয়েছে এক ধরনের সাইবার ক্রাইম। অনলাইনে অন্য লোকের মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে ভুয়া আবেদন করে হয়রানি করছে কিছু চক্র। তবে এ ধরনের সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে কোনো উদ্যোগ এখনও নেয়া হয়নি। অশ্লীল কথাবার্তা লেখা আবেদনগুলো বাদ দিয়ে দেয়া হয় বলে জানান ডিএমপির সিস্টেম এনালিস্ট শারমিন আফরোজ। এ ধরনের ভুয়া ও আপত্তিকর আবেদনের সংখ্যা প্রচুর। তবে এখন পর্যন্ত কত ভুয়া আবেদন তারা শনাক্ত করেছেন তা জানাতে পারেননি তিনি।
বিভ্রান্তিকর তথ্যের জন্য অনলাইন জিডির মৃত্যু!
যেসব থানায় অনলাইনে জিডি করা যায় সেসব থানার অধিকাংশ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানিয়েছেন, অনলাইনে জিডি আবেদনকারী বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে থাকেন। চাঁদা দাবি বা হত্যার হুমকি সংক্রান্ত তথ্য জানিয়েও অনলাইনে জিডি আবেদন করে থাকেন অনেকে। এসব অভিযোগে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জিডি আবেদনকারী তার পূর্ণ নাম-ঠিকানা দেন না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাসার ঠিকানা ও ফোন নম্বর দেয়া হলেও তা সঠিক থাকে না। ফলে তদন্ত করতে গিয়ে এর কোনো সত্যতা পাওয়া যায় না। অনলাইন জিডিগুলোর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করতে তার নামে হুমকি বা চাঁদাবাজির মতো মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়। এজন্য এগুলো তদন্তে অভিযোগের কোনো সত্যতা মেলে না। এজন্যই অনলাইন জিডির ক্ষেত্রে থানা পুলিশের অনীহা বলে জানান থানার ওসি।
কয়েকটি থানায় একটিও অনলাইন জিডি হয়নি!
দেশে অনলাইন জিডি ব্যবস্থা চালু হওয়ার ২ বছর পার হলেও পুলিশের অনলাইন জিডি ব্যবস্থায় সফলতা আসেনি। নগরবাসী এর কোনো সুফল পাচ্ছে না। কোনো কোনো থানায় এ পর্যন্ত একটিও অনলাইন জিডি হয়নি। ডিজিটাল দেশ গঠনের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২০১০ সালের এপ্রিলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৪১টি থানায় অনলাইন জিডি চালু করা হয়। প্রথমদিকে সামান্য সাড়া পড়লেও ক’দিন পরই চিত্র পাল্টে যায়। এখন থানাগুলোতে অনলাইন জিডি হয় না বললেই চলে। ফলে বন্ধ হতে চলেছে অনলাইন জিডি ব্যবস্থা।
সাধারণ জিডি বনাম অনলাইন জিডি
থানায় সাধারণ জিডি ও অনলাইন জিডির একটি তথ্য পাওয়া গেছে ডিএমপি থেকে। ডিএমপি বলছে, থানাগুলোতে সশরীরে হাজির হয়ে নগরের মানুষ মাসে ৬৫ থেকে ৭০ হাজার জিডি করেন। অপরদিকে অনলাইন জিডির সংখ্যা ২০০ থেকে ২৫০টির বেশি নয়। থানাপ্রতি মাসে গড়ে এনালগ জিডির সংখ্যা প্রায় ২০০০। অনলাইন জিডির সংখ্যা ৫টিও হচ্ছে না। কোনো কোনো থানায় মাসের পর মাস অনলাইন জিডি হচ্ছে না। অনলাইন জিডির দায়িত্বে থাকা একজন কর্মকর্তা বলেন, এটাকে অনলাইন জিডি বলা যায় না। বলা যায় নন ইমার্জেন্সি সার্ভিস। অনলাইনে জিডি হলেও থানাগুলো অনলাইনে সাপোর্ট দিতে পারছে না আইনগত সমস্যায়। এ কারণে গোটা প্রক্রিয়াটি সফলতার মুখ দেখছে না। ওই কর্মকর্তা জানান, অনলাইনে জিডির আবেদন করার পর ৭ দিনের মধ্যেই থানায় গিয়ে জিডির কপি সরবরাহ করতে হয়। এটা বাধ্যতামূলক। যখন আবেদন করা হয় তখনই একটি রেফারেন্স নম্বর দেয়া হয়। ওটাই জিডি নম্বর। এ নম্বর দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন অফিসিয়াল কাজ চালানো যায়। কিন্তু পুরো কাজ শেষ করা যায় না। আদালতে প্রয়োজন হয় স্বাক্ষরিত কপির। অনলাইনে জিডির পর থানা থেকে যে কপি সরবরাহ করা হয় তাতে কোনো স্বাক্ষর থাকে না। স্বাক্ষরবিহীন জিডি আদালতে গ্রহণযোগ্য হয় না। অনলাইনে জিডি করার পরও থানায় গিয়ে জিডির কপি আনতে হচ্ছে। সেটা আনার পরও কাজে আসছে না। জিডিটাল স্বাক্ষরের কোনো সরকারি আদেশ এখনও আসেনি। এ সংক্রান্ত আদেশ এলেও তা ভেরিফাইয়ের পদ্ধতি কী হবে তা স্থির করা হয়নি। এসব কারণে মানুষ অনলাইনে সময় নষ্ট না করে সরাসরি থানায় গিয়ে জিডি করছেন। নতুন ৮টিসহ রাজধানীতে বর্তমানে ৪৯টি থানা রয়েছে। চালু থাকা থানারগুলোর বেহাল দশায় থানাগুলো এ ব্যবস্থা চালু করতে আগ্রহী হচ্ছে না।
২ বছরে মোট ৫৭০০টি অনলাইন জিডি
গত ২ বছরে রাজধানীর ৪১টি থানায় ৫ হাজার ৭০০ অনলাইন জিডি হয়েছে। গুলশান ও ধানমন্ডি থানায় এ ধরনের জিডির সংখ্যা বেশি। গত ২ বছরে গুলশান থানায় প্রায় ২ হাজার অনলাইন জিডি হয়েছে। উত্তরখান, দক্ষিণখান, তেজগাঁও, গেণ্ডারিয়া এবং যাত্রাবাড়ী থানায় অনলাইন জিডি হয়নি। পুলিশের একজন সহকারী কমিশনার জানান, বেশিরভাগ অনলাইন জিডিই হচ্ছে জাতীয় পারিচয়পত্র ও মোবাইলের সিমকার্ড হারানো সংক্রান্ত বিষয়ে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই জিডি বেশি করছেন। তবে শাহবাগ থানার অধীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তুলনামূলক বেশি হলেও এখানে অনলাইন জিডির সংখ্যা খুবই কম। গুলশান-ধানমন্ডিতে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেশি। শাহবাগ থানার অধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বেশিরভাগই সরকারি। তিনি মনে করেন, এ থেকে মনে হচ্ছে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছে কম।
অনলাইন জিডির বিকল্প
সম্প্রতি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (সদর দফতর) হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আগের মতোই থানায় গিয়ে জিডি করার ব্যবস্থা চালু রেখে ডিএমপি সদর দফতরে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) গ্রহণে বিশেষ সেল খোলার বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। তবে যেসব থানায় অনলাইন জিডির সুযোগ রয়েছে তা সীমিত পরিসরে চলবে। ডিএমপির কর্মকর্তারা জানান, সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর ডিএমপি সদর দফতরে বিশেষ সেলে জিডি নেয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের আটটি জোনের পৃথক বুথ করা হবে। পুলিশের ৮ জোনের প্রতিটি বুথে একজন করে উপ-পরিদর্শক (এসআই) দায়িত্বে থাকবেন। তিনি অভিযোগ গ্রহণ করে তাতে নম্বর বসাবেন। পরে এসব জিডির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানো হবে। ওয়ান স্টপ সার্ভিস স্কিমের কারণে এভাবে জিডি করতে ভোগান্তি কমে আসবে।
অনেকটা ঢাকঢোল পিটিয়ে বাংলাদেশে অনলাইনে ডিজিটাল জিডি করার একটি কার্যক্রম শুরু হয়েছিল আজ থেকে দুই বছর আগে। কিন্তু ডিজিটাল পদ্ধতির নামে এনালগ কার্যক্রম পরিচালনা করায় বন্ধ হতে চলেছে অনলাইনে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ব্যবস্থা। প্রচারণার অভাবে অনলাইনে জিডি আবেদনকারীদের অনাগ্রহ আর পুলিশের অনীহার কারণে থেমে গেছে পুলিশের এ সেবা কার্যক্রম। এমন পরিস্থিতিতে এ কার্যক্রম পুরোপুরিই বন্ধ করে দেয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, অনলাইন জিডি কার্যক্রম থমকে গেলেও ভোগান্তি কমাতে ডিএমপি সদর দফতরে জিডি গ্রহণে বিশেষ সেল চালু করার চিন্তা-ভাবনা চলছে। তবে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা বলছেন, অনলাইন জিডি নিয়ে অনলাইনে সাপোর্ট দিতে পারলে এবং আইনি জটিলতা না থাকলে অনলাইন জিডির বিষয়টি জনপ্রিয়তা পেত।
অনলাইন জিডি শুরুর কথা
অনলাইন জিডি কার্যক্রম প্রথম শুরু হয়েছিল ২০১০ সালের ৩ মার্চ উত্তরা মডেল থানায়। তত্কালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন অনলাইনে জিডি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। পরে ডিএমপির ৪১টি থানায় এ কার্যক্রম ছড়িয়ে দেয়া হয়। পর্যায়ক্রমে প্রত্যেক থানায় কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের সংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। সেসময় অনলাইন জিডির আওতায় যেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল তা হচ্ছে—ইভটিজিং, ছিনতাই, দলিল-দস্তাবেজ ইত্যাদি হারিয়ে যাওয়া, নতুন-পুরনো নৈশপ্রহরী, দারোয়ান, গৃহপরিচারিকা, কেয়ারটেকার নিয়োগ বা পলায়ন; ভাড়াটিয়া সম্পর্কিত তথ্য, প্রবাসী সমস্যা, অভিযোগ ভিকটিম ইনফরমেশন প্রভৃতি।
অনলাইনে জিডির সংক্ষিপ্ত নিয়ম
অনলাইনে জিডি করতে হলে ডিএমপি বা বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইটে (www.police.gov.bd A_ev www.dmp.bd.gov) লগ ইন করতে হবে। এসব ওয়েবসাইটে ‘সিটিজেন হেল্প রিকোয়েস্ট অপশন’-এ ক্লিক করলে জিডি করার পেজটি আসবে। সেখানে পর্যায়ক্রমে কয়েকটি ফরম রয়েছে। সমস্যা অনুযায়ী এসব ফরম পূরণ করতে হবে। পাশাপাশি অভিযোগকারীকে সমস্যার কথাও উল্লেখ করতে হবে। মামলার জন্য বা কারও হুমকির সম্মুখীন হলে এ সংক্রান্ত বিবাদীর ফোন নম্বর ও মোবাইল নম্বর উল্লেখ করতে হবে। পরীক্ষার কাগজপত্র, পরিচয়পত্র, মোবাইল ফোন, ব্যাংকের জরুরি কাগজ ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রের নাম উল্লেখ করতে হয় গ্যালারি ফরমে। থানায় জিডি করতে হলে জিডির কপিতে যে ব্যক্তি জিডি করবে তাকে নিজ হাতে স্বাক্ষর দিতে হয়। আর অনলাইনে জিডির ক্ষেত্রে নিজের কোনো স্বাক্ষর দিতে হয় না। ঘরে বা কর্মক্ষেত্রে বসেই করা যায় জিডি। আবেদন করতে হলে বাংলা বা ইংরেজিতে লেখা যাবে। বাইরে লিখে ওয়ার্ড ফাইল ও পিডিএফ ফাইল সংযুক্ত করে দেয়ার ব্যবস্থা আছে। আবেদন করার পর আবেদনকারীকে অনলাইনে একটি সিরিয়াল নম্বর ও একটি সম্ভাব্য তারিখ দেখানো হয়। ওই তারিখের মধ্যে স্থানীয় থানায় গিয়ে নম্বর দেখিয়ে একটি কপিতে স্বাক্ষর করে জিডির কপিটি তুলতে পারেন আবেদনকারী। আবার পুলিশের তাত্ক্ষণিক সাড়া দেয়ার প্রয়োজন নেই এমন ক্ষেত্রে যেমন পাসপোর্ট হারানো, বখাটে বা মাদকসেবীদের সম্পর্কে তথ্য প্রদান বা এজাতীয় ক্ষেত্রে অনলাইনে জিডি করা যেতে পারে বা সরাসরি পুলিশ সদর দফতরে ফ্যাক্স বা ই-মেইল করতে পারেন। এ পদ্ধতিতে দেশের বাইরে থেকেও জিডি করা সম্ভব। এক্ষেত্রে অনলাইনে জিডি করার পর ই-মেইল বা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জিডি নম্বরটি জিডিকারীকে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ই-মেইল : bangladesh@police.gov.bd ফ্যাক্স : +৮৮০-২-৯৫৫৮৮১৮
তবুও যেতে হয় থানায়!
অনলাইনে আবেদন করলেও জিডির কপি সংগ্রহ করতে থানায় যেতে হবে আবেদনকারীকে। ডিজিটাল বলা হলেও শতভাগ এনালগ পদ্ধতি। অনলাইনেই জিডির কপি তোলার ব্যবস্থা নেই। অসম্পূর্ণ তথ্য দিয়েই করা হচ্ছে বেশিরভাগ জিডি। এসব জিডির তদন্তও হচ্ছে না। আবেদনের পর সাড়া মিলছে গড়ে এক সপ্তাহ পর। দিন দিন জিডির সংখ্যা কমছে। অথচ প্রতিদিন রাজধানীতে সহস্রাধিক লিখিত জিডি হচ্ছে। ভুক্তভোগী ও পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, পদ্ধতিগত জটিলতা ও প্রচারের অভাবে আবেদনকারীরা অনলাইনে জিডি করছেন না। প্রত্যেক থানার নিজস্ব পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে নিজেদের জিডিগুলো দেখতে পারলেও তারা তা এডিট করতে পারে না। পুরো প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণ হয় ডিএমপির দফতর থেকে। দায়িত্বশীল কর্মকর্তা শারমিন আফরোজ বলেন, ‘অনলাইনের মাধ্যমেই আবেদনকারীকে জিডির কপি দেয়ার প্রযুক্তি আমাদের নেই। বিষয়টি নিয়ে ভাবা হচ্ছে। জিডির আবেদন করার সঙ্গে সঙ্গে আবেদনকারীকে অনলাইনের রেফারেন্স নম্বর দিয়ে দেয়া হয়। অনেকে ওই রেফারেন্স নম্বরসহ আবেদন কপি দিয়ে তার প্রয়োজন মেটায়। অনলাইনে আবেদন করার পর সিরিয়াল নম্বর ও সম্ভাব্য তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানা থেকে জিডির কপি সংগ্রহ করতে হচ্ছে আবেদনকারীকে।’
অনলাইনে প্রথম জিডিই ভুয়া!
অনলাইনে জিডির ব্যবস্থা ডিজিটাল হলেও কেউ এখানে ক্রাইম করলে তা ডিজিটাল পদ্ধতিতে ধরার কোনো প্রযুক্তি নেই বাংলাদেশে। আর তাই ২০১০ সালে অনলাইনে জিডি ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর প্রথম ওই বছরের ৫ মার্চ উত্তরা থানায় অনলাইনে যে জিডি করা হয়, তা ছিল ভুয়া। এনামুল হক নামে এক ব্যক্তি অসম্পূর্ণ ঠিকানা দিয়ে আবেদনে জানান, তার পরিচয়পত্র হারিয়ে গেছে। অনলাইনের ৩৩ নম্বর রেফারেন্সের ৩৮৩ নম্বর ওই জিডিতে একটি মোবাইল ফোনের নম্বর দেয়া হয়। ওই মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে অপর প্রান্ত থেকে জানানো হয়, ফোনটির মালিকের নাম হাবিবুর রহমান। তিনি কুমিল্লায় থাকেন এবং তিনি ঢাকায় কখনও কোনো জিডি করেননি!
অনলাইনে জিডি ফরমেটে চলছে সাইবার ক্রাইম
জিডির আবেদনের নামে শুরু হয়েছে এক ধরনের সাইবার ক্রাইম। অনলাইনে অন্য লোকের মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে ভুয়া আবেদন করে হয়রানি করছে কিছু চক্র। তবে এ ধরনের সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে কোনো উদ্যোগ এখনও নেয়া হয়নি। অশ্লীল কথাবার্তা লেখা আবেদনগুলো বাদ দিয়ে দেয়া হয় বলে জানান ডিএমপির সিস্টেম এনালিস্ট শারমিন আফরোজ। এ ধরনের ভুয়া ও আপত্তিকর আবেদনের সংখ্যা প্রচুর। তবে এখন পর্যন্ত কত ভুয়া আবেদন তারা শনাক্ত করেছেন তা জানাতে পারেননি তিনি।
বিভ্রান্তিকর তথ্যের জন্য অনলাইন জিডির মৃত্যু!
যেসব থানায় অনলাইনে জিডি করা যায় সেসব থানার অধিকাংশ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানিয়েছেন, অনলাইনে জিডি আবেদনকারী বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে থাকেন। চাঁদা দাবি বা হত্যার হুমকি সংক্রান্ত তথ্য জানিয়েও অনলাইনে জিডি আবেদন করে থাকেন অনেকে। এসব অভিযোগে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জিডি আবেদনকারী তার পূর্ণ নাম-ঠিকানা দেন না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাসার ঠিকানা ও ফোন নম্বর দেয়া হলেও তা সঠিক থাকে না। ফলে তদন্ত করতে গিয়ে এর কোনো সত্যতা পাওয়া যায় না। অনলাইন জিডিগুলোর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করতে তার নামে হুমকি বা চাঁদাবাজির মতো মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়। এজন্য এগুলো তদন্তে অভিযোগের কোনো সত্যতা মেলে না। এজন্যই অনলাইন জিডির ক্ষেত্রে থানা পুলিশের অনীহা বলে জানান থানার ওসি।
কয়েকটি থানায় একটিও অনলাইন জিডি হয়নি!
দেশে অনলাইন জিডি ব্যবস্থা চালু হওয়ার ২ বছর পার হলেও পুলিশের অনলাইন জিডি ব্যবস্থায় সফলতা আসেনি। নগরবাসী এর কোনো সুফল পাচ্ছে না। কোনো কোনো থানায় এ পর্যন্ত একটিও অনলাইন জিডি হয়নি। ডিজিটাল দেশ গঠনের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২০১০ সালের এপ্রিলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৪১টি থানায় অনলাইন জিডি চালু করা হয়। প্রথমদিকে সামান্য সাড়া পড়লেও ক’দিন পরই চিত্র পাল্টে যায়। এখন থানাগুলোতে অনলাইন জিডি হয় না বললেই চলে। ফলে বন্ধ হতে চলেছে অনলাইন জিডি ব্যবস্থা।
সাধারণ জিডি বনাম অনলাইন জিডি
থানায় সাধারণ জিডি ও অনলাইন জিডির একটি তথ্য পাওয়া গেছে ডিএমপি থেকে। ডিএমপি বলছে, থানাগুলোতে সশরীরে হাজির হয়ে নগরের মানুষ মাসে ৬৫ থেকে ৭০ হাজার জিডি করেন। অপরদিকে অনলাইন জিডির সংখ্যা ২০০ থেকে ২৫০টির বেশি নয়। থানাপ্রতি মাসে গড়ে এনালগ জিডির সংখ্যা প্রায় ২০০০। অনলাইন জিডির সংখ্যা ৫টিও হচ্ছে না। কোনো কোনো থানায় মাসের পর মাস অনলাইন জিডি হচ্ছে না। অনলাইন জিডির দায়িত্বে থাকা একজন কর্মকর্তা বলেন, এটাকে অনলাইন জিডি বলা যায় না। বলা যায় নন ইমার্জেন্সি সার্ভিস। অনলাইনে জিডি হলেও থানাগুলো অনলাইনে সাপোর্ট দিতে পারছে না আইনগত সমস্যায়। এ কারণে গোটা প্রক্রিয়াটি সফলতার মুখ দেখছে না। ওই কর্মকর্তা জানান, অনলাইনে জিডির আবেদন করার পর ৭ দিনের মধ্যেই থানায় গিয়ে জিডির কপি সরবরাহ করতে হয়। এটা বাধ্যতামূলক। যখন আবেদন করা হয় তখনই একটি রেফারেন্স নম্বর দেয়া হয়। ওটাই জিডি নম্বর। এ নম্বর দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন অফিসিয়াল কাজ চালানো যায়। কিন্তু পুরো কাজ শেষ করা যায় না। আদালতে প্রয়োজন হয় স্বাক্ষরিত কপির। অনলাইনে জিডির পর থানা থেকে যে কপি সরবরাহ করা হয় তাতে কোনো স্বাক্ষর থাকে না। স্বাক্ষরবিহীন জিডি আদালতে গ্রহণযোগ্য হয় না। অনলাইনে জিডি করার পরও থানায় গিয়ে জিডির কপি আনতে হচ্ছে। সেটা আনার পরও কাজে আসছে না। জিডিটাল স্বাক্ষরের কোনো সরকারি আদেশ এখনও আসেনি। এ সংক্রান্ত আদেশ এলেও তা ভেরিফাইয়ের পদ্ধতি কী হবে তা স্থির করা হয়নি। এসব কারণে মানুষ অনলাইনে সময় নষ্ট না করে সরাসরি থানায় গিয়ে জিডি করছেন। নতুন ৮টিসহ রাজধানীতে বর্তমানে ৪৯টি থানা রয়েছে। চালু থাকা থানারগুলোর বেহাল দশায় থানাগুলো এ ব্যবস্থা চালু করতে আগ্রহী হচ্ছে না।
২ বছরে মোট ৫৭০০টি অনলাইন জিডি
গত ২ বছরে রাজধানীর ৪১টি থানায় ৫ হাজার ৭০০ অনলাইন জিডি হয়েছে। গুলশান ও ধানমন্ডি থানায় এ ধরনের জিডির সংখ্যা বেশি। গত ২ বছরে গুলশান থানায় প্রায় ২ হাজার অনলাইন জিডি হয়েছে। উত্তরখান, দক্ষিণখান, তেজগাঁও, গেণ্ডারিয়া এবং যাত্রাবাড়ী থানায় অনলাইন জিডি হয়নি। পুলিশের একজন সহকারী কমিশনার জানান, বেশিরভাগ অনলাইন জিডিই হচ্ছে জাতীয় পারিচয়পত্র ও মোবাইলের সিমকার্ড হারানো সংক্রান্ত বিষয়ে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই জিডি বেশি করছেন। তবে শাহবাগ থানার অধীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তুলনামূলক বেশি হলেও এখানে অনলাইন জিডির সংখ্যা খুবই কম। গুলশান-ধানমন্ডিতে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেশি। শাহবাগ থানার অধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বেশিরভাগই সরকারি। তিনি মনে করেন, এ থেকে মনে হচ্ছে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছে কম।
অনলাইন জিডির বিকল্প
সম্প্রতি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (সদর দফতর) হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আগের মতোই থানায় গিয়ে জিডি করার ব্যবস্থা চালু রেখে ডিএমপি সদর দফতরে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) গ্রহণে বিশেষ সেল খোলার বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। তবে যেসব থানায় অনলাইন জিডির সুযোগ রয়েছে তা সীমিত পরিসরে চলবে। ডিএমপির কর্মকর্তারা জানান, সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর ডিএমপি সদর দফতরে বিশেষ সেলে জিডি নেয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের আটটি জোনের পৃথক বুথ করা হবে। পুলিশের ৮ জোনের প্রতিটি বুথে একজন করে উপ-পরিদর্শক (এসআই) দায়িত্বে থাকবেন। তিনি অভিযোগ গ্রহণ করে তাতে নম্বর বসাবেন। পরে এসব জিডির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানো হবে। ওয়ান স্টপ সার্ভিস স্কিমের কারণে এভাবে জিডি করতে ভোগান্তি কমে আসবে।
No comments:
Post a Comment