Pages

Wednesday, December 19, 2012

দেশে আর কত দিন বন্ধ থাকবে ইউটিউব?

নাজমুল হোসেন
তারিখ: ১৩ ডিসেম্বর, ২০১২
ইউটিউব
গত ২৩ জুন যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পাওয়া ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’ চলচ্চিত্রটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মুসলিম দেশে ব্যাপক বিােভ শুরু হয়। বিশ্বজুড়ে আন্দোলনের মুখে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে নির্মিত এ ভিডিওকিপ অপসারণ করতে সরকারের প থেকে গুগলকে কয়েক দফা চিঠি দিয়ে অনুরোধ করা হয়। বাংলাদেশ কম্পিউটার সিকিউরিটি ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিমের এ অনুরোধে সাড়া দেয়নি গুগল। এর পরিপ্রেেিত দেশে গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাত থেকে অনলাইন ভিডিও শেয়ারিংয়ের জনপ্রিয় এ ওয়েবসাইট বন্ধের সিদ্ধান্ত বলবৎ রেখেছে বিটিআরসি। এ নির্দেশ পালন করছে সব ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে এই প্রোপটে সরকার কর্তৃক গৃহীত ইউটিউব বন্ধ করার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই চলচ্চিত্রের সব প্রচার ও প্রচারণা বন্ধ করার জন্য ইউটিউব নিষিদ্ধ করেছে সরকার। কিন্তু ইউটিউব বন্ধ করার পরেও গুগল অথবা অন্যান্য ওয়েবসাইটে খুব সহজে পাওয়া যাচ্ছে। এই নিষিদ্ধ চলচ্চিত্র দেখা এবং ডাউনলোড করাও যাচ্ছে খুব সহজেই। ফেসবুক, টুইটার, অরকুট, গুগল প্লাসসহ অনেক সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোতে ভিডিওটি শেয়ার করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই ওয়েবসাইটগুলোও কি বন্ধ করেছে সরকার? প্রকৃতপে ইউটিউব বন্ধ করে সরকার  মিথ্যে সান্ত্বনা দিচ্ছে।
প্রশ্ন উঠেছে বিতর্কিত চলচ্চিত্রের লিংক সরিয়ে নেয়া না হলে বন্ধই থাকবে ইউটিউব। এ বিষয়ে ছাড় দেয়া হলে তা ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে উৎসাহ দেবে বলে মনে করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এ প্রসঙ্গে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, ইউটিউব চালুর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এখন পর্যন্ত আগের নির্দেশ বহাল রয়েছে। আপত্তিকর ভিডিও না সরানো হলে এটি খুলে দেয়া হবে না। কোনো কোনো এলাকায় ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর (আইএসপি) গ্রাহকেরা সরাসরি লিংকের মাধ্যমে ইউটিউবের ভিডিও দেখতে পাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সম্পর্কে গিয়াস উদ্দিন আহমেদ জানান, কোনো প্রতিষ্ঠান এটি বন্ধ না করলে তা খতিয়ে দেখা হবে। ইন্টারনেট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইউটিউব খুলে দেয়ার বিষয়ে কোনো নির্দেশ দেয়া হয়নি।
গত নভেম্বরে বিকল্প সার্ভারের মাধ্যমে এটি খুলে দেয়ার বিষয়ে বিটিআরসিকে প্রস্তাব দেয় ইউটিউবের মূল প্রতিষ্ঠান গুগল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গুগলের এ ধরনের সার্ভার রয়েছে। এ সার্ভারের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে এটির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। বিকল্প সার্ভারের মাধ্যমে ইউটিউব চালু করা হলে তাতে বিটিআরসির নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্ব্াবধানের সুযোগ থাকবে। সম্প্রতি বিতর্কিত চলচ্চিত্র ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’ প্রদর্শনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত ইউটিউবের পে রায় দিয়েছেন। এর আগে চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত এ ভিডিও সরিয়ে নেয়ার এক আবেদন বাতিল করে দিয়েছেন। আর এতে ভিডিওটি না সরানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউটিউব কর্তৃপ। দেশের প্রযুক্তিবিদরা মনে করছেন, ইউটিউব বন্ধ করার অর্থ হলো তথ্যের উন্মুক্ত প্রবাহ থেকে আমাদের দূরে সরিয়ে রাখার অপচেষ্টা। সম্প্রতি বাংলাদেশসহ বিশ্বের জনপ্রিয় সাইট ইউটিউবে পেশাগত দতা থেকে শুরু করে অনলাইনভিত্তিক যেকোনো কাজের েেত্র ভিডিও টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়। এ ছাড়া অনেক খবরই আছে যেগুলো কোনোখানে প্রচার হয় না, শুধু ইউটিউবেই আমরা সেটি দেখতে পারি। সাংবাদিকরা পৌঁছতে না পারলেও ইউটিউবের মাধ্যমে একজন সাধারণ মানুষও সাংবাদিক হতে পারে। ইউটিউব শুধু বিনোদন বা শিামূলকই নয়, এটির মাধ্যমে এখন অনেকেই উপার্জন করছে। ইউটিউব থেকে এডসেন্সের ভিডিও ‘এডসেন্স’ মাধ্যমে বাংলাদেশের অনেকেই উপার্জন করে। এতে করে ফ্রিল্যান্সাররা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ছাড়া ইউটিউবে লাখ লাখ ধর্মীয় ভিডিও রয়েছে।  ডা: জাকির নায়েকের লেকচার, কুরআনের তিলাওয়াত, ইসলামি জীবনযাপনসংক্রান্ত বিভিন্ন ভিডিও প্রতিনিয়ত মানুষ দেখতেন। ইউটিউব বন্ধ থাকায় এসব ভিডিও দেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দেশের নাগরিকেরা।
http://allearninginformationbd.blogspot.com/

No comments:

Post a Comment